Sunday, April 20, 2025
Google search engine
HomeDesignআন্তর্জাতিকআল-আকসা ঘিরে নতুন ষড়যন্ত্র

আল-আকসা ঘিরে নতুন ষড়যন্ত্র

মুসলিম বিশ্বের তৃতীয় পবিত্র স্থান আল-আকসা মসজিদকে ঘিরে নতুন করে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। ফিলিস্তিনের দাবি, দখলদার ইসরায়েলের অবৈধ বসতিস্থাপনকারীরা মসজিদটি গুঁড়িয়ে দিয়ে সেখানে ইহুদি ‘থার্ড টেম্পল’ নির্মাণের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। হিব্রু ভাষার নানা অনলাইন প্ল্যাটফর্মে এমন পরিকল্পনার ইঙ্গিতও মিলেছে।

এই পরিস্থিতিতে ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্র ও প্রবাসী মন্ত্রণালয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ এক বিবৃতিতে সতর্কতা জারি করে জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এ বিষয়ে জরুরি হস্তক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছে। তারা এই পরিকল্পনাকে জেরুজালেমে ইসলাম ও খ্রিষ্ট ধর্মাবলম্বীদের পবিত্র স্থানে ‘পদ্ধতিগত উসকানি’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে।

বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, আল-আকসা প্রাঙ্গণে অমুসলিমদের প্রার্থনা নিষিদ্ধ থাকা সত্ত্বেও ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীরা নিয়মিত সেখানে প্রবেশ করে ধর্মীয় কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে—যা আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের সামিল। এসব কর্মকাণ্ডে সরাসরি সহায়তা দিচ্ছে ইসরায়েলের নিরাপত্তা বাহিনী। অন্যদিকে জেরুজালেমের ‘স্ট্যাটাস কু’ অনুযায়ী, এমন কার্যকলাপ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

এদিকে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলা অব্যাহত রয়েছে। শুক্রবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ভয়াবহ বিমান হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৬৪ জন। আহত হয়েছেন আরও বহু মানুষ।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, নিহতদের বেশিরভাগই গাজা সিটি ও উত্তর গাজার বাসিন্দা। পাশাপাশি দক্ষিণাঞ্চলীয় রাফার কাছে শাবৌর এবং তেল আস সুলতান এলাকায় নতুন করে ঘাঁটি গেড়েছে ইসরায়েলি বাহিনী, সেখান থেকেই পরিচালিত হচ্ছে সাম্প্রতিকতম হামলা।

হামলার দিনে ছিল খ্রিষ্টানদের পবিত্র গুড ফ্রাইডে। তবে উৎসবের কোনো আবহ ছিল না গাজায়। স্থানীয় এক খ্রিষ্টান ইহাব আয়াদ জানান, এবার তিনি কাউকে দেখতে পর্যন্ত যাননি, কারণ তার অনেক বন্ধু ও আত্মীয়-স্বজন আর জীবিত নেই—ইসরায়েলি হামলায় ধ্বংস হয়েছে তাদের ঘরবাড়ি।

চলমান সহিংসতা বন্ধে এবার পূর্ণাঙ্গ শান্তি চুক্তির আহ্বান জানিয়েছে হামাস। সংগঠনটির সিনিয়র নেতা খলিল আল-হায়া স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, তারা আর কোনো অন্তর্বর্তীকালীন চুক্তি মানবে না। জিম্মি বিনিময়, বন্দি মুক্তি ও গাজার পুনর্গঠনের শর্তে তারা আলোচনা করতে প্রস্তুত। তবে ইসরায়েল এখনও পর্যন্ত এই প্রস্তাবে সম্মতি দেয়নি।

জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মার্কিন মুখপাত্র জেমস হিউইট বলেছেন, হামাসের মন্তব্যই প্রমাণ করে তারা শান্তি নয়, বরং সহিংসতা চায়। অন্যদিকে, ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাজ ফের বলেছেন, হামাসকে পরাজিত করতেই এই যুদ্ধ—এবং তা শেষ না হওয়া পর্যন্ত অভিযান চলবে।

২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া সংঘাতে এ পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছে প্রায় ৫১ হাজার মানুষ, আর আহত হয়েছেন প্রায় ১ লাখ ১৭ হাজার। নিহতদের মধ্যে ৫৬ শতাংশই নারী ও শিশু। গাজার সরকারি তথ্য অনুযায়ী, বাস্তবে নিহতের সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে ৬১ হাজার ৭০০, কারণ বহু মানুষ এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছেন।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments